এক মায়ের প্রশ্ন- তার শিশু চিপস চকলেট খায়, অন্য কিছু মানে ভাত খায় না!
প্রথমেই বলি, ভাত খাওয়াকেই খাওয়া মনে করা ঠিক না। কলা অনেক দেশের প্রধান খাবার!
যদিও লিখেন নি, তবু ধারনা করা যায়, খাবার টেবিলে তাকে জোর করা হয়, অত্যুক্ত করা হয়। ফলে তার মনের উপর বিরূপ প্রভা্ব পড়ছে। ঘটনা ক্রমাগত হলে, শিশুর মনে খাদ্য ভীতির জন্ম হয়েছে। এটা শিশুর রোগ। খাবার দেখলেই তার মন খারাপ হয়, দূরে সরে যায়, আসন্ন অত্যাচারের কথা মনে এলেই সে বিষন্ন হয়ে পড়ে, এমন কি সে বমি ভাবের( nausea) শিকার হয়।
তার উত্তরে বলি-
চিপস, চকলেট কোন শিশু অন্য শিশুকে না দেখলে বা মা বাবা আদর করে না দিলে, কখনো এ সব চিনেনা। চায় ও না।
শিশু স্বাধীন নয়। পরিবার তাকে যে দিকে নেয়, সে সেই দিকে যায়।
সে মোবাইল চিনেনা, মা বাবা চেনায়।
চিপসএ থাকতে পারে অনেক ক্ষতিকর উপাদান, প্রিজারভেটিভ। যা শিশুর কিডনি লিভার সহ আরো অঙ্গের ক্ষতি করে।
বাজারের প্রায় সব শিশু খাদ্যের এ দশা। যে সব জুস পাওয়া যায়, তা কৃত্তিম উপাদান, রং দিয়ে তৈরী ।
ফর্মের মুরগীর ডিম ও মাংসে, ক্যানসার সৃষ্টি করা ক্রোমিয়ামের হার ক্ষতিকর মানের চেয়ে শত শত গুন বেশী থাকতে পারে, যদি তাদেরকে আদর্শ খাবার না দেয়া হয়।
আমার দেশে ‘খাদ্যের মান নিয়ন্ত্রন’ কোন পর্যায়ে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। শিশু খাদ্যে আসক্ত হবার উপাদান থাকতে পারে।
বড় খাবারের আগে এ সব ছোট খাবার খেলে স্বভাবতই শিশুর ক্ষুধা মরে যায়। তার ক্ষুধা সৃষ্টি হতে পারে না,
বিশেষ করে মিষ্টি খাবার, যেমন চকলেট ইত্যাদী খেলে।
লিখা হলো সংক্ষেপে।
প্রতিটি শিশুর না খেতে চাওয়ার কারন ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। তাই মা বা অন্য যারা তাকে খাওয়ায় তাদেরকে কাউন্সিলিং এর ব্যপার আছে।
মা ই যেখানে রেগে গিয়ে চড়ও বসায় অনেক সময়। শিশু ভয়ের চোটে গিলে ফেলে ও বমি করে দেয়, সেখানে বাসায় গৃহকর্মী রেখে গেলে, শিশুর কি অবস্থারহয়, তা অনুমেয়। বিদেশে ডে কেয়ার সেন্টারে এ সব নির্যাতন হয় না!
অনেক মা কে আমি সে বমির অংশটুকুও চামচে গাল থেকে নিয়ে আবার মুখে ভরে দিতে দেখেছি।
বলা যায়, মা, এ ক্ষেত্রে সাইকিক হয়ে গেছেন-
তার শিশু মোটা হচ্ছে না!
যেটুকু খাবার খাবে এক বেলা, তা বাটিতে নিয়ে বসেছেন, তা অবশ্যই ছলে বলে কৌশলে পেটে চালান করে দিতেই হবে!
শিক্ষিত মা!
বলতে দ্বিধা নেই, অনেক সময়, শিক্ষিত মায়ের কাছে শিশু বেশী নির্যাতিত।
এর অনেক অনেক কারন আছে। না বুঝেই করেন অনেকে।
মা হবার আগে, মা কে শিশু লালন পালন ও মায়ের স্বাস্থ্য রক্ষা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া দরকার।
কি করে বুকের দুধ খাওয়াতে হয়, খাবার খাওয়াতে হয়, শিশুর মানসিক বিকাশ ও শারিরীক বৃদ্ধি, মায়ের খাবার, তিনি কি করবেন, করবেন না, কোন কোন ঔষধ খাবেন না, পরিবারিক সংহতি, ইত্যাদী সমন্ধে জানানো প্রয়োজন।
আমি আমার দেখা শিশুদের মা কে এসব বিষয়ে প্রশিক্ষিত সহকারীর মাধ্যমে বলি, নিজে বলি, দেখাই ও কাগজ পত্র দিয়ে দেই।
তবে এ সব তো বিচ্ছিন্ন ও অপর্যাপ্ত।
একটা জাতির ভবিষ্যৎতকে নষ্ট হতে দেয়া যায় না।